লাইলাতুল কদর: রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মহিমান্বিত রজনী

লাইলাতুল কদর: রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মহিমান্বিত রজনী

লাইলাতুল কদর: রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মহিমান্বিত রজনী

ঢাকা, [১৮ মার্চ ২০২৫]:

 পবিত্র রমজান মাসের শেষ দশকে যে রাতটি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম, তা হলো লাইলাতুল কদর। কুরআন ও হাদিসে এ রাতের ফজিলত এবং মাহাত্ম্য বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। রাতে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে অফুরন্ত রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নাযিল হয়।

লাইলাতুল কদরের মাহাত্ম্য

লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা স্বয়ং কুরআনে একটি সম্পূর্ণ সূরা নাযিল করেছেন। সূরা কদরে আল্লাহ বলেন: "নিশ্চয়ই আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি লাইলাতুল কদরে। আর তুমি কি জানো, লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর হলো হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। সে রাতে ফেরেশতারা এবং রূহ (জিবরাইল আ.) অবতীর্ণ হন তাদের রবের অনুমতিক্রমে, প্রত্যেক বিষয়ে (ফয়সালাসহ)। শান্তিই শান্তি, তা ফজরের আগ পর্যন্ত।" (সূরা কদর: ১-৫)

লাইলাতুল কদরের ফজিলত:

১. হাজার মাসের ইবাদতের সমান সওয়াব: এ রাতে ইবাদত করলে ৮৩ বছর ৪ মাসের ইবাদতের সওয়াব লাভ হয়।

২. গুনাহ মাফের সুযোগ: রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে ঈমান ও আশা সহকারে ইবাদত করবে, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” (বুখারি ও মুসলিম)

৩. মহান আল্লাহর বিশেষ রহমত: এ রাতে ফেরেশতারা মুমিনদের জন্য শান্তি, রহমত ও বরকতের বার্তা নিয়ে অবতীর্ণ হন।

৪. তাকদির নির্ধারণের রাত: এ রাতে মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করা হয় এবং তা আল্লাহ তাআলার ফয়সালামতে ফেরেশতাদের নিকট পৌঁছে দেওয়া হয়।

 কবে পালিত হয় লাইলাতুল কদর?

 লাইলাতুল কদর নির্দিষ্ট কোনো তারিখে নয়, তবে হাদিসে রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, “তোমরা লাইলাতুল কদরকে রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে অনুসন্ধান কর।” (বুখারি) এ রাতে করণীয়:

১. বেশি বেশি ইবাদত করা — নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, জিকির, দোয়া ও ইস্তিগফার।

২. রাসুল (সা.)-এর শেখানো বিশেষ দোয়া পড়া: اللهم إنك عفو تحب العفو فاعف عني উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নি। অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; অতএব, আমাকে ক্ষমা করুন।

৩. অসহায় ও দরিদ্রদের সাহায্য করা এবং দান-সদকা করা। উপসংহার: লাইলাতুল কদর হলো মুমিনের জীবনে এক অপূর্ব সুযোগ।

এ রাতের ইবাদত আমাদের জীবনের গুনাহ মাফ ও জান্নাতের পথ সুগম করতে পারে। আসুন, আমরা সবাই এ রাতটিকে যথাযথ ইবাদত ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যমে অর্থবহ করে তুলি।